মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫৮ পূর্বাহ্ন

বিশ্বাসে মিলায় ডেঙ্গু.

স্বদেশ ডেস্ক: বিশ্বাস এমন একটি জিনিস, যা কেউ হারাতে চায় না। আমরাও বিশ্বাস করতেই চেয়েছিলাম। কিন্তু পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে, তাতে বিশ্বাস শুধু টলে যায়নি, বরং ধুয়েমুছে সাফ হওয়ার জোগাড়। বিশ্বাস স্থাপন করে এখন আর কাঙ্ক্ষিত কিছু মিলছে না, মিলছে সবচেয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত অবস্থা।

ঢাকা শহরে ডেঙ্গু প্রথম এসেছিল একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে। আমরা হয়তো বিশ্বাস করেছিলাম যে, সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এত বছরে ডেঙ্গু ঠেকাতে কিছু প্রাথমিক ব্যবস্থা নিতে পারবে। এটি ঠিক, অঙ্ক কষে কখনো রোগ নির্মূল করা যায় না। অনেক ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঝুঁকির কারণে এটি সম্ভব হয় না। তবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু সেই কাজটিও যে করা হয়নি, তা এ বছর পরিষ্কার। তাই ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া ছেলেকে দাফন করে এসেই হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত মেয়ের পাশে উদ্বেগে দিন কাটাতে হচ্ছে মা–বাবাকে। ঢাকা ও এর আশপাশে শুরু হয়েছে রক্ত খোঁজার হুড়োহুড়ি। হাসপাতালে লাইনও বড্ড লম্বা। কেউ যাচ্ছেন জীবন বাঁচাতে, কেউ যাচ্ছেন জীবন ঝুঁকিতে আছে কি না, জানতে।

অথচ শুরুতে রাজধানীর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র বলেছিলেন, সারা দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন ‘ছেলেধরার মতো গুজব’। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত মানুষের সংখ্যা নিয়েও তাঁর আপত্তি ছিল। তা থাকতেই পারে। তাঁর কথার সারমর্ম ছিল, ডেঙ্গু ভয়ংকর রূপে দেখা দেয়নি। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কথার সুরও তেমনি ছিল। এই কর্তাব্যক্তিদের বক্তব্য, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণেই আছে। বিভ্রান্ত আমরা ক্ষুব্ধ মনে হয়তো কিছুটা মেনেও নিয়েছিলাম। ধন্দে থাকা স্বাভাবিক, সরকারের মাথারা কি আর ভুল বকবেন? অথচ এর কিছুদিনের মধ্যেই ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ল দেশের প্রায় সব জেলাতে। নিজের পরিচিতদের মধ্যেও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার খবর কানে এল। এক নিকটজন ডেঙ্গু জ্বরে হাসপাতালে গেলেন। মানসিক ঝড়ঝাপটা ফের জানিয়ে গেল, ডেঙ্গু হওয়ার জ্বালা কেমন! দুই-তিন বছর ধরেই ব্যক্তিগতভাবে ঢাকার মশার কামড়ের ‘তাৎপর্য’ বোঝার অভিজ্ঞতা হচ্ছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের আশ্বাসে বিশ্বাস রাখা তাই এভারেস্ট জয়ের চেয়েও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877